Join Our Telegram Channel Join Now!

ক্রিপ্টোকারেন্সী কি বাংলাদেশে অবৈধ? ক্রিপ্টো লেনদেন কিংবা এয়ারড্রপ থেকে অর্থ কামালে কি জেল হবে? জানুন আদ্যপান্ত!

কেন বাংলাদেশ ক্রিপ্টোকারেন্সী অবৈধ? আর্থিক লেনদেন, P2P কিংবা এয়ারড্রপে কাজ করলে কি জেল জরিমানা হবে? দেশে ক্রিপ্টো ইউজারই বা কত? বিস্তারিত!

কেন বাংলাদেশ ক্রিপ্টোকারেন্সী অবৈধ? আর্থিক লেনদেন, P2P কিংবা এয়ারড্রপে কাজ করলে কি জেল জরিমানা হবে? দেশে ক্রিপ্টো ইউজারই বা কত? বিস্তারিত!

ক্রিপ্টোকারেন্সী কেন বাংলাদেশের মূলধারায় অনুমোদিত নয়?

আসসালামু আলাইকুম! ক্রিপ্টো জানালাতে সকলকেই স্বাগতম! আশা করি মহান রব্বুল আ'লামীনের অশেষ রহমতে সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমিও কুশল মঙ্গলেই আছি। তবে এই ভালো থাকা কতদিনের তা আমি জানিনা। কারণ, শিরোনাম দেখে হয়তো ইতিমধ্যেই বুঝে ফেলেছেন, কেন আমি এই কথা বলছি! কখনো দেশের ক্ষতি করিনি তবুও কেন জানি সর্বদা অজানা এক ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। বলতে আক্ষেপ হয়, বেকারত্বের বেড়াজালে ডুবতে থাকা এই শিক্ষিত প্রজন্মের একটা ক্ষুদ্র অংশ যখন নিজেকে আর্থিকভাবে কিছুটা স্বচ্ছল করিবার লক্ষে ক্রিপ্টোতে ঝাঁপ দিলো তখনই বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক ২০১৪ সালে ঘোষণা আসিলো, "বিটকয়েন কিংবা ভার্চুয়াল মুদ্রায় যেকোন ধরনের লেনদেন বাংলাদেশে অবৈধ!" তো এই একটা বাক্যেই সকলের গলা শুকিয়ে যাওয়ার কথা। বিশেষ করে আমরা যারা ক্রিপ্টোতে বিভিন্ন এয়ারড্রপে কাজ করে কিছু আয় রোজগার করি, তাদের জন্য এই লাইনটা অনেক বেশিই বেদনাদায়ক এবং ভীতিকর। মিডিয়ার পাশাপাশি ক্রিপ্টো নিয়ে বাংলাদেশের পাড়া মহল্লায়ও অনেক মিসকনসেপশন রয়েছে। ক্রিপ্টো ব্যবহারে কি সত্যিই জেল হতে পারে? কেনই বা এই আইন? এটাই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়। তাই বেশি কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্রিপ্টোঃ

সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যমলা অপরূপ সৌন্দর্যে মণ্ডিত এই দেশের মাটিতে চোর-বাটপারের কোনই অভাব নেই। বাটপারির খেতাবে ভূষিত করলে আমার ধারণা বাংলাদেশ টপ টেনের মধ্যে থাকবে। কারণ, নোংরা রাজনীতির খেলায় মেতে ওঠা সকল অশিক্ষিত রাজনীতিবিদ যখন জনমানুষের টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধ পন্থায় বিদেশে পাচার করতে চাই, ঠিক তখনই ক্রিপ্টো তাদের কাছে অর্থ লোপাটের সবচেয়ে বড়, সহজ এবং সবচেয়ে সেইফ মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত হয়। ফলস্বরূপ, মানি লন্ডারিং এর ভয়ে বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকে এখনো অব্ধি বৈধতা দেওয়া হয়নি।

আইনগত কারণঃ

  • Bangladesh Bank (বিসি) ২০১৪ সালে এক ঘোষণা দিয়ে জানায় যে ভির্চুয়াল কারেন্সি (যেমন Bitcoin, Ethereum ইত্যাদি ) আইনগতভাবে অনুমোদিত মুদ্রা নয়। [সূত্রঃ NewAgeBD]
  • Foreign Exchange Regulation Act, 1947” এর সেকশন 2(b) মতে মুদ্রা (Currency) বলতে যা বোঝায়, নোট-মুদ্রা, চেক, ড্রাফট ইত্যাদি। কিন্তু ক্রিপ্টো ভার্চুয়াল কয়েনগুলো এই সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। [সূত্রঃ The Daily Star]
  • এছাড়া, লেন-দেন কিংবা ট্রেডিং যদি হয় মুদ্রা পাচার, সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন কিংবা অবৈধ নিয়মের পরিপন্থী, তাহলে Criminal Investigation Department, Bangladesh (CID) বলেছে এটি “অবৈধ” হতে পারে। [সূত্রঃ The Business Standard]

জরিমানা বা কারাদণ্ডঃ

  • ২০২২ সালের সার্কুলারে বলা হয়েছে, যদি ভার্চুয়াল কারেন্সি লেন-দেন হয় এবং ফরেক্স নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ হয়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  • একটি সংবাদ অনুযায়ী: “যে কেউ ভার্চুয়াল কারেন্সি লেন-দেন করবে, তা সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন বা মুদ্রা পাচার আইনভঙ্গ করলে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে।” [সূত্রঃ The Business Standard]
  • তবে “এয়ারড্রপ” বা “P2P প্ল্যাটফর্মে কাজ” করার ক্ষেত্রে সরাসরি আইনভঙ্গ বলছে কি না, সেটি আইন পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করছে না। কিন্তু যেকোনো লেন-দেন যদি অপরিচিত চ্যানেল দিয়ে হয় বা ফরেক্স/ব্যাংক নিয়মভঙ্গ হয় তাহলে ঝুঁকি রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, ট্রেডিং, P2P অথবা অন-চেইন ট্রান্সাকশনের সাহায্যে লেনদেন এবং সেই সাথে এয়ারড্রপ থেকে কি অর্থ উপার্জন করা যাবে? উত্তর আমারও সঠিক জানা নেই। তবে এতটুকু বলতেই পারি, বাংলাদেশের আইন ভঙ্গ করে দেশের টাকা বিদেশে না পাঠালেই আমরা সবাই নিরাপদ থাকবো ইং শা আল্লাহ!

উপসংহারঃ 

বাংলাদেশে ক্রিপ্টো অবৈধ ঘোষণার পরেও ২০২৪ Chain Analysis এর তথ্যমতে, ক্রিপ্টোকারেন্সী ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ ১৫১টি দেশগুলোর মধ্যে ৩৫তম স্থান দখল করে আছে। Defifreak এর তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের প্রায় ৩.১ মিলিয়ন মানুষ ক্রিপ্টোর সঙ্গে জড়িত। কিছুকিছু গণমাধ্যমের মতে এই সংখ্যা ৪০ লাখেরও বেশি। বহিঃবিশ্ব যেখানে ক্রিপ্টোকে অনেক আগেই বৈধতা দিয়েছে, বাংলাদেশ সেখানে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, মানি লন্ডারিং এবং মেইন্সট্রিম মিডিয়াগুলোর বিভিন্ন ভুল ধারণা প্রচারের জন্য ক্রিপ্টো আজও বাংলাদেশে অবমূল্যায়িত হচ্ছে। সরকারের প্রতি আমার একান্ত অনুরোধ, সকল সমস্যার সমাধান খুঁজে ক্রিপ্টো কারেন্সীকে বাংলাদেশে অনুমোদন দেওয়া। ফলে এতে বেকারত্ব কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। ধন্যবাদ!


About the Author

I am Yasir Arafat Emon from Pabna, Bangladesh. Currently, I am a 3rd-year undergraduate student majoring in Bangla Language and Literature. Alongside my studies, I am deeply passionate about writing poetry and songs, as well as performing them. I fi…

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.